![](https://dailykolomkotha.com/wp-content/uploads/2022/02/image-524561-1645854271.jpg)
ভলোদিমির জেলেনস্কি
ভলোদিমির জেলেনস্কি
ভলোদিমির জেলেনস্কি উজ্জ্বল আলোর নিচে দাঁড়িয়ে ইউক্রেনীয় জনগণকে একটি বার্তা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, ইউক্রেন আজ একতাবদ্ধ, আর এটিই আমাদের বিজয়। বক্তৃতাটি ছিল কাল্পনিক। এই কথাটি জেলেনস্কি অভিনীত তার এক ভাগ্যহীন স্কুলশিক্ষককে নিয়ে ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’-এর সমাপনী দৃশ্য থেকে এসেছে। যে শোতে দেশের প্রেসিডেন্টের বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর নিজেই প্রেসিডেন্ট হন।
সেই সিরিজ শুধু জেলেনস্কিকে তারকা বানিয়ে দেয়নি, এটি অবশেষে তার বাস্তব জীবনের রাষ্ট্রপতি প্রচারের জন্য স্প্রিংবোর্ড হিসেবে কাজ করে। ২০১৯-এর এপ্রিলে ওই শোর সমাপ্তির এক মাসের মধ্যে, কৌতুক অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ এবং শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন জেলেনস্কি।
জেলেনস্কির দুর্ভাগ্য যে, শুক্রবার আবারও একটি উজ্জ্বল আলোর নিচে জেলেনস্কিকে দাঁড়াতে হয়েছে। কিন্তু সেদিন আর এই দিনের মধ্যে আজ অনেক তফাৎ। বৃহস্পতিবার রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেন আক্রমণ করার পর শোর চূড়ান্ত মুহূর্তগুলো এমন হতে পারে তিনি তা আর কখনও অনুভব করেননি।
শুক্রবার সকালে টিভিতে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, আমাদের সৈন্যরা খুব তীক্ষ্ণতার সঙ্গে দেশকে রক্ষার জন্য লড়ে যাচ্ছেন। এটি এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহৃর্ত। আমাদের দেশের ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছে।
রাশিয়ার পুরোদমে হামলা বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়। রাশিয়ার সৈন্যরা জল, স্থল ও আকাশপথে ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছেন। এই হামলা দেখে মনে হচ্ছে— পুতিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ইউক্রেন এবং এটির রাজধানী দখল করা।
শুক্রবার জেলেনস্কি পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার জন্য পুতিনকে কল করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের সব জায়গায় যুদ্ধ চলছে। চলুন এই যুদ্ধ ও মৃত্যু বন্ধ করতে আমরা আলোচনার টেবিলে বসি।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা রিয়া নভোস্তির প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে মিনস্কে কথা বলার জন্য প্রস্তুত ছিল।
জেলেনস্কির এক উপদেষ্টা সিএনএনকে বলেন, কিয়েভ এখন সেই প্রস্তাবে প্রস্তুত আছে।
ইউক্রেনের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার এখনও টিকে আছে। কিন্তু পুতিন শুক্রবার এটি পরিষ্কার করে বলেছেন যে, তিনি ইউক্রেনকে একটি বৈধ সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেখেন না।
পুতিন ইউক্রেনের জনগণকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, তোমরা জেলেনস্কিকে উৎখাত কর। তোমরা ক্ষমতা নিজের হাতে নাও। আর তাতেই তোমাদের সঙ্গে যে কোনো চুক্তিতে আসা সহজ হবে। যেখানে মাদকাসক্ত এবং নব্য-নাৎসিদের এই গ্যাং, যারা কিয়েভে বসতি স্থাপন করেছে এবং সমগ্র ইউক্রেনীয় জনগণকে জিম্মি করেছে তাদের সঙ্গে চুক্তিতে আসা খুবই ভয়াবহ।
পুতিন এবং তার সরকার বারবার ভিত্তিহীন ও ভুল দাবি করেছে যে, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ইউক্রেনীয় সরকার একটি ‘ফ্যাসিবাদী বা ‘নাৎসি’ শাসন। জেলেনস্কি ইহুদি এবং তার পরিবারের সদস্যরা হলোকাস্টে নিহত হয়েছিল।
পুতিনের মন্তব্য ইউক্রেনে কোনো ধরনের অভ্যুত্থানে সহায়তা করবে না। এই হামলার পর কিয়েভের অনেক বাসিন্দা শহর ছেড়ে চলে গেছে। আর যারা রয়ে গেছে, তারা পুতিনকে সমর্থন করার সম্ভাবনা কম। কারণ ইউক্রেনের শেষ রাশিয়াপন্থি নেতাকে ২০১৪ সালে একটি বিদ্রোহে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল দেশটির জনগণ।
আর এসব কারণে পুতিন ইউক্রেনের ক্ষমতায় জেলেনস্কির সরকারকে দেখতে চায় না। তাই জেলেনস্কি ক্রেমলিনের এক নাম্বার টার্গেটে পরিণত হয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।